অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার।

আজকে আমরা আলোচনা করব আমেরিকার অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার দ্বারা আল-কায়দা জঙ্গী প্রধান ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যু রহস্য সম্বদ্ধে।

আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার মাস্টার মাইন্ড ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর রহস্য এবং  অপারেশন নেপচুন স্পেয়ারের ঘটনা ও কাহিনী হলিউড সিনেমার গল্পকে হার মানায়।

অন্ধকার জগতের কুখ্যাত জঙ্গী প্রধান ওসামা বিন লাদেন বিশ্ববাসির কাছে এক অভিশপ্ত নাম। লাদেন দ্বারা সুপার পাওয়ার আমেরিকার বিরুদ্ধে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার

নীল নকশার বিন্দু মাত্র আঁচ পায়নি সুপার পাওয়ার আমেরিকা। কিন্তু ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার ১০ বছর পরে আমেরিকার নেভিশীল কমান্ডোর অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার দ্বারা

ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর ঘটনা নতুন করে লাদেনের নিষ্ঠূর চেহেরা মনে করিয়ে দেয়। বিশ্ববাসীকে সুপার পাওয়ার আমেরিকা আরো একবার স্মরণ করিয়ে দেয় সেই হল আসল সুপার পাওয়ার।

ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলা


২০০১ সালে সেপ্টেম্বর মাসের ১১ তারিখে ওসামা বিন লাদেনের জঙ্গী সংগঠন আল-কায়দা দ্বারা আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ৯/১১ সন্রাসী হামলা করা হয়।

ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয় প্রায় ৩,০০০ হাজারেরও বেশি মানুষ এবং আহত হয় ২৫,০০০ হাজার মানুষ।

পরে আল-কায়দা জঙ্গী প্রধান ওসামা বিন লাদেন যখন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার দায়ভার নিয়ে স্পষ্ট করে দেয় ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলা লাদেনের নের্তৃত্বে করা হয়েছিল,

তখন আমেরিকার বিভিন্ন গোয়েন্দা এজেন্সি ওসামা বিন লাদেনের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি শুরু করে দেয়। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্যি,ক্ষমতার দম্ভে

উন্মত্ত সুপার পাওয়ার আমেরিকা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি তাদের মত শক্তিধর দেশে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার মত বড় মাপের জঙ্গী হামলা হতে পারে।

আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা CIA এর কাছে এতবড় ষড়যন্ত্রের কোনো খবরই ছিলনা যার ফল স্বরূপ আমেরিকা বাসিকে তাদের দেশের ৩,০০০ হাজার মানুষের তাজা প্রাণের বলি দিতে হয়েছিল।

আরো পড়ুন : পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরের রহস্য। 

লাদেনকে আমেরিকা কিভাবে খুঁজে বার করল


ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলা হওয়ার পর আমেরিকার CIA সহ আরো অন্যান্য দেশের সিক্রেট সার্ভিস এজেন্সি লাদেনের খোঁজে আদা জল খেয়ে নেমে পড়ে।

কিন্তু ধ্রুত ওসামা কোন এক জায়গায় বেশিদিন স্থায়ীভাবে থাকত না,সে বিনা রুটিনে তার আস্তানা বদল করতে থাকত। লাদেন কখনো পাহাড়ের গুহায়,আবার কখনো বাঙ্কারে লুকিয়ে বেড়াত।

লাদেন তার অনুচরদের সাথে কখনো সরাসরি দেখা করতো না। যদি লাদেনের কোনো অনুচরদের সাথে দেখা করার প্রয়োজন হত,তাহলে লাদেন পত্রবাহকের মাধ্যমে

অনুচরদের কাছে খবর পাঠাত। লাদেন সরাসরি কোনো ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া-মোবাইল,টিভি,রেডিও,ইন্টারনেট ব্যবহার করতো না।

লাদেন তার অনুচরদের সাথে পত্রাচারের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করতো। লাদেনের সকল পত্রবাহক লাদেনের কাছে খুব বিশ্বস্ত ছিল।

লাদেন পত্রবহনের কাজে নির্দিষ্ট করে কোন একজন পত্রবাহকে দিয়ে পত্র পাঠাতো না। সে বিভিন্ন অনুচরের কাছে পত্র পাঠানোর জন্য আলাদা আলাদা পত্র বাহককে পাঠাত।

লাদেন শুধু একজন পত্রবাহককে ব্যবহার করে নিজের প্রাইভেসি লিখ করতে চায়নি,তাছাড়া লাদেন কোনো একজায়গায় বেশিদিন থাকতো না,

তাই নির্দিষ্টভাবে কোনো একজন ব্যক্তি লাদেনের পত্রবাহক ছিলনা। তাই শুধু একজন পত্রবাহককে ফলো করে লাদেনকে খুঁজে বার করা ছিল খড়ের গাদায় সুচ খোঁজার মত কাজ।

এভাবেই লাদেনের খোঁজে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার ০৬ বছর কেটে গেছে আমেরিকা লাদেনের টিকি পর্যন্ত খুঁজে পায়না।

অপরদিকে বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে লাদেনের বোমা হামলায় মৃত্যুর বিভিন্ন ফেক খবর ভাইরাল হতে থাকে,কিন্তু আমেরিকা নিশ্চিত ছিল লাদেন এখনো মারা যায়নি,

বিভিন্ন সময়ে লাদেনের দ্বারা রিলিজ করা অডিও এবং ভিডিও ক্লিপ গুলি লাদেনের জীবিত থাকার প্রমান দিচ্ছিল,যা আমেরিকা সরকারের ব্যর্থতা প্রমান করছিল।

লাদেন CIA এর সঙ্গে যতই লুকোচুরি খেলুকনা কেন আমেরিকা কিন্তু হতাশ হয়নি,CIA কিন্তু মনে পন করে বসেছিল যেভাবেই হোক লাদেনকে জীবিত অথবা মৃত খুঁজে বার করবেই।

আল-কায়দা সহ আরো অন্যান্য জঙ্গী গোষ্ঠী গুলোর প্রতিটি পদক্ষেপের উপর CIA কড়া নজর রাখছিল,কিন্তু CIA এর হাতে বার বার হতাশা ছাড়া লাদেনের কোনো খবর হাত লাগছিলনা।

একইভাবে ০৬ বছর কেটে যাওয়ার পর ২০০৭ সালে আমেরিকার গোয়ান্টানা জেল থেকে CIA প্রথমবার  লাদেনের অস্তিত্বের খোঁজ পায়।

গোয়ান্টানা হল আমেরিকা সরকারের একটি স্পেশাল জেল,যেই জেলে শুধুমাত্র দেশ ও বিদেশে জঙ্গী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত কয়েদীদের কয়েদ করে রাখা হয়।

গোয়ান্টানা জেলে CIA তার বিভিন্ন অনুচরদের কয়েদীদের ছদ্মবেশে জেলে পুড়ে রাখতো। যাতে আরো অন্যান্য জঙ্গীদের সাথে মিলে মিশে জঙ্গী কার্যকলাপের তথ্য CIA সংগ্রহ করতে পারে।

গোয়ান্টানা জেলে কয়েদীর ছদ্মবেশে থাকা CIA এজেন্ট, এক কয়েদীর কাছ থেকে লাদেনের এক পত্র বাহকের কথা জানতে পারে।

এই খবর পেয়ে আরো একবার CIA এর কর্তারা নড়েচড়ে বসে,কিন্তু টানা ০২ বছর চেষ্টা করেও CIA লাদেনের পত্রবাহক ও তার ঠিকানার কোনো হদিস খুঁজে পায়না।

নেপচুন স্পেয়ার 5

অপরদিকে মার্কিন সেনা বাহিনী লাদেনের আস্তানার সন্দেহ প্রবন জায়গা আফগানিস্তানের পাহাড় ও বাঙ্কার গুলোতে নিয়মিত অপারেশন চালাতে থাকে।

কারণ আমেরিকার সন্দেহ ছিল লাদেন আফগানিস্তানের পাহাড়ি এলাকায় আস্তানা বদল করে আমেরিকান ফোর্স থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

তাছাড়া ওসামা বিন লাদেন নিজেকে যতটা সম্ভব স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা করতো,তাই মার্কিন সেনা বাহিনীর আফগানিস্তানের পাহাড়ি এলাকায় নজরদারি বেশি ছিল।

কারণ ওসামা বিন লাদেন ভালোভাবেই জানত পাহাড়ী দুর্গম অঞ্চলে স্যাটেলাইট থেকে ঠিকভাবে ইমেজ ক্যাপচার করা যায়না।

আরো পড়ুন : মোনালিসা ছবির গুপ্ত রহস্য। 

ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যু রহস্য


২০০৯ সালে CIA লাদেনের সেই বিশ্বস্ত পত্রবাহকের খোঁজ পেয়ে যায়। তারা জানতে পারে লাদেনের পত্রবাহক হল পাকিস্তানের ইসলামাবাদ শহরের বাসিন্দা।

খোঁজ নিয়ে জানতে পারা যায় লাদেনের পত্রবাহক এবং তার একভাই দীর্ঘ্য দিন ধরে পাকিস্তানের ইসলামাবাদ শহরে একই বাড়িতে বসবাস করছে।

এরপর থেকেই CIA এর এজেন্টরা লাদেনের পত্রবাহক ও তার ভাইয়ের উপর ঈগলের দৃষ্টি জমিয়ে রাখে, এইভাবে মাসের পর মাস কেটে যায় পত্রবাহক ও তার ভাইকে

অনুসরণ করে আমেরিকা লাদেনের কোনো তথ্য জোগাড় করে উঠতে পারেনা। এইসবের পিছনে আর একটি বড় কারণ ছিল লাদেন কোন একজনকে পত্রবাহক নির্দিষ্টভাবে

পত্রবাহক হিসাবে ব্যবহার করতো না। বিভিন্ন সময় সাপেক্ষে লাদেন তার বিশ্বস্ত লোককে পত্রবাহক হিসাবে ব্যবহার করতো।

এরকমও শোনা যায় লাদেনের ইচ্ছে ব্যতীত তার সাথে তার অনুচরেরাও দেখা করার সুযোগ পেত না,লাদেনের সঙ্গে দেখা করার জন্য বিশেষ সময় ও দিন লাদেন নিজে ধার্য্য করতো।

লাদেনের আদেশ ছাড়া তার পত্রের জবাব পর্যন্ত তার অনুচরেরা দিতে পারত না। হাতে গোনা জন কয়েক গুপ্তচর লাদেনের গোপন ডেরার ঠিকানা জানত।

এভাবেই দিনের পর দিন,মাসের পর মাস কেটে যাচ্ছিল কিন্তু CIA এর হাতে বড় সাফল্য হাত লাগছিলনা। একসময় CIA এর মনে হচ্ছিল লাদেন হয়ত তার পত্রবাহক পাল্টে নিয়েছে,

সুতরাং লাদেনের এই পত্রবাহককে ফলো করে হয়ত কোনো সাফল্য হাত লাগবেনা। তাছাড়া খবর এইও ছিল যে লাদেন এক জায়গায় বেশিদিন থাকেনা,

ডেরা পরিবর্তন করার সাথে সাথে তার যাবতীয় তথ্য প্রমান মুছে দিয়ে দেয় যাতে করে কোনো তথ্য কারো হাত না লাগে। কিন্তু আর বেশিদিন CIA কে অপেক্ষা করতে হলনা,

দুম করে একদিন CIA এর হাতে বড় সাফল্য হাত লাগল। একদিন লাদেনের ইসলামাবাদের পত্রবাহক গাড়ি করে ইসলামাবাদ থেকে ৬১ কিমি দূরে এফটাবাদ শহরে এসে পৌঁছায়।

(এফটাবাদ হল পাকিস্তানে একটি সুরক্ষিত স্থান,যেখানে পাকিস্তান আর্মির প্রাক্তন সেনা পদস্থ আধিকারিকদের বাংলো এবং ফ্যামেলি কোয়াটার রয়েছে।

আর এর পাসেই রয়েছে পাকিস্তান আর্মির ট্রেনিং সেন্টার,এই ট্রেনিং সেন্টারে বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তানি আর্মিরা তাদের যুদ্ধাঅভ্যাস করতো,এককথায় সর্বসাধাণের জন্য প্রবেশ বর্জিত ক্ষেত্র)

পত্রবাহক শহরের অনত্র কোথাও না ঘুরে গিয়ে সোজাসোজি এফটাবাদ শহরের প্রান্তে দুর্গ সমান একটি বাড়ির কাছে গিয়ে গাড়ি দাঁড় করালেন।

তাপর এদিক ওদিক না দেখে সোজাসোজি ঐ বাড়িটির ভিতরে চলে গেলেন। এই বাড়িটিকে বাড়ি বললে মনে হয় ভুল বলা হবে,বাড়িটি নিত্যান্ত কোনো দুর্গ থেকে কোনো অংশে কম ছিলনা।

বাড়িটির চারিদিক ১৮-২০ ফুট উঁচু এবং ০৫-০৬ ফুট চওড়া দেওয়াল দিয়ে ঘেরা ছিল। দেওয়ালের উপর কাঁটা তারের ফিনিসিং দিয়ে বেড়া দেওয়া ছিল।

এককথায় বাড়িটি ছিল পুরো নিরাপত্তার চাদরে মোড়া,ছোটো খাটো বম্বিং হামলায় বাড়িটির তিল মাত্র ক্ষতি হবেনা। এসবের মধ্যে একটা আশ্চর্য্যের বিষয় ছিল

এফটাবাদ শহরের অন্যান্য বাড়িগুলোতে সুরক্ষাকর্মী মোতায়েন থাকলেও নিরাপত্তার চাদরে মোড়া এতবড় বাড়িটির গেটে কোনো সুরক্ষাকর্মী (Security Guard)

মোতায়েন ছিলনা যা কিছুটা হলেও CIA এজেন্টদের মনে খটকা লাগছিল। এইসব দেখে এফটাবাদের এই বাড়িটির উপর CIA নজর জমায়।

দুর্গ সমান বাড়িটিকে নিয়ে CIA এর মনে কৌতূহলের অবসান ঘটেছিল না যেন। অনুসন্ধানের মাধ্যমে CIA এর হাতে তথ্য আসে ২০০৫ সালে এফটাবাদে এই বাড়িটি নির্মাণ করা হয়।

বাড়িটির নির্মাণ বাবদ পাকিস্তানি রুপিতে ০৫ কোটি টাকা খরচ হয়,কিন্তু বাড়িটি নিয়ে তথ্য জোগাড় করা গেলেও বাড়ির মালিক বা বাড়ির ভিতরে বসবাস কারী মানুষজনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সচরাচর ঐ বাড়িতে বসবাসকারী মানুষজন কেউ বাড়ির বাইরে বার হত না। এইসমস্ত নানা ধরণের সন্দেহ প্রবণ লক্ষণ গুলি CIA এর মনে নানা প্রশ্নের বাঁসা বাঁধাচ্ছিল।

কিন্তু তারা এটা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারছিলেন না যে এতো কড়া চারিদিকে নিরাপত্তা রক্ষীদের আবাস স্থলে ওসামা বিন লাদেন প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে থাকতে যাবে কেন ?

আর যদি লাদেন সত্যি সত্যি এখানে থেকে থাকে তাহলে পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির কাছে তার খবর থাকত। আর এই ঘটনার খবরের সূচনা তারা আমেরিকাকে দিত।

আরো পড়ুন : কালাপানি সেলুলার জেলের ইতিহাস। 

এফটাবাদের বাড়িতে লাদেনের খোঁজ


পুরো এফটাবাদ শহরে সেনা ছাউনির মাঝে ওসামা বিন লাদেনের বাড়িটি একমাত্র বাড়ি ছিল যে বাড়িতে কোনো ইন্টারনেট,টেলিফোন,টিভি কানেকশন ছিলনা।

আর CIA এর হাতে আগে থেকেই লাদেনকে ঘিরে তথ্য়ছিল,লাদেন ব্যক্তিগত ভাবে কোনো ইলেক্ট্রনিক গেজেট ব্যবহার করেনা,আর এই বাড়িটিতেও কোনো ইলেকট্রিক মিডিয়ার সংসাধন ছিলনা

যা রীতিমত ঐ বাড়ির ভিতর লাদেন থাকার অস্তিত্বের দিকে ইশারা করছিল। তাছাড়া ব্যক্তিগত ভাবে প্রতিবেশীদের সঙ্গে যোগাযোগ না রেখে,

নিজেদেরকে সমাজ থেকে আলাদা করে এত বড় দুর্গসম বাড়িতে একা একা বাস করা এই সমস্ত পয়েন্ট গুলো যেন বাড়িটিতে লাদেনের অস্তিত্বকে আরো গভীর করে তুলছিল।

সন্দেহের বশে CIA দ্বারা এফটাবাদের বাড়িটির যাবতীয় তথ্য আমেরিকার হোয়াইট হাউসে পাঠানো হয়। হোয়াইট হাউসের নির্দেশে আমেরিকার মহাকাশ অনুসন্ধানকেন্দ্র NASA,

তার স্যাটেলাইটের ফোকাস পাকিস্তানের এফটাবাদের বাড়িটির উপর করে দেয়। NASA-র কন্ট্রোল রুম থেকে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টা রাতদিন ০৭ দিন স্যাটেলাইট ইমেজ ক্যাপচার করা হতে থাকে।

এইভাবে বেশ কয়েদিন কেটে যাওয়ার পর NASA-র স্যাটেলাইট ইমেজে সন্ধে বেলা বাড়ির উঠোনে প্রায় ০৬ ফুট উচ্চতার একটি লোককে পায়চারী করতে দেখা গেল।

তার সাথে সাথে পরিবারের আরো অন্যান্য সদস্যদের ছবি নেওয়া হল। কিন্তু অন্যান্য ছবির মধ্যেও একটি লোকের উচ্চতা প্রায় ০৬ ফুটের কাছাকাছি বলে মনে হল।

ফটো দেখে সব কিছু আন্দাজ করা না গেলেও ওই ০৬ ফুট উচ্চতার মানুষটিকে আমেরিকা ওসামা বিন লাদেন বলে ধরে নেয়।

অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার
অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার

তখন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি পদে আসীন ছিলেন বারাক ওবামা। ওবামার নির্দেশে CIA তখন আরো অন্যান্য দেশের গুপ্তচর এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করে।

বিভিন্ন দেশের গুপ্তচর এজেন্সির কাছ থেকে স্যাটেলাইট ইমেজের তথ্যর সাথে লাদেনের ডেটার ম্যাচিং করে দেখা হয় এফটাবাদের বাড়িতে থাকা ০৬ ফুট হাইটের ঐ ব্যক্তি ওসামা বিন লাদেন কিনা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা ওসামাকে ঘিরে সমস্ত জিজ্ঞাসার অবসান ঘটিয়ে নিশ্চিত হতে চাইছিলেন এফটাবাদের বাড়িতে থাকা ব্যক্তি প্রকৃত লাদেন।

অল্পদিনের মধ্যেই CIA এর হাতে বিদেশী গুপ্তচরদের দেওয়া তথ্যের সাথে এফটাবাদের বাড়ি থেকে ক্যাপচার করা স্যাটেলাইট ইমেজের সাথে হুবহু লাদেনের ডেটা ম্যাচ করে যায়।

এবারে আমেরিকা নিশ্চিত হয়ে যায় পাকিস্তানের এফটাবাদের বাড়ির উঠোনে পায়চারী করতে দেখতে পাওয়া ব্যক্তি হল আসলে ওসামা বিন লাদেন।

ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর ঘটনা


আমেরিকা চারিদিক হয়ে নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর পাকিস্তানে লাদেনের এফটাবাদের বাড়িতে অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু তখন পর্যন্ত আমেরিকার মনে

খটকা লাগছিল এফটাবাদের মত শহরে পাকিস্তানের সৈন্য ঘাঁটির কাছে এত বড় দুর্গ সম প্রাসাদে লাদেন এতদিন ধরে বসবাস করছে অথচ সত্যিই কি

পাকিস্তান সরকারের কাছে এই ঘটনার কোনো খবর নেই। আর যদি সত্যি সত্যি পাকিস্তান এই ব্যাপারে অবগত হয়ে না থাকে তাহলে পাকিস্তান আর্মি এবং

আমেরিকান আর্মি যৌথ ভাবে লাদেনের এফটাবাদের বাড়িতে সেনা অপারেশন করবে। কিন্তু অপরদিকে আমেরিকার মনে প্রশ্ন ছিল যদি লাদেনের আস্তানার অস্তিত্বের

খবর পাকিস্তানকে জানানো হয় তাহলে ইনফরমেশন লিক হয়ে গেলে তাদের এতদিনের পরিশ্রম ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে। মোট কথা আমেরিকা পাকিস্তানকে ঠিক ভরসা করে উঠতে পারছিল না।

লাদেনের খবর আমেরিকার কাছে আছে এই খবর কোনো প্রকারে লাদেনের কাছে পৌঁছে গেলে রাতারাতি লাদেন তার আস্তানা বদলে নিতেও পারে।

এরপর আমেরিকা ঠিক করে তারা লাদেনকে নিয়ে কোনো তথ্য পাকিস্তানের কাছে শেয়ার করবেনা। আবার আমেরিকার মনে আশঙ্কা হচ্ছিল এতো বড় অপারেশন

পাকিস্তানকে না জানিয়ে পাকিস্তানের বুকে করাটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হবে। যাইহোক এরপর আমেরিকা ঠিক করে এফটাবাদে ড্রোন হামলা করবে।

এরকম পরিস্থিতে ড্রোন হামলায় ছিল আমেরিকার কাছে একমাত্র মোক্ষম উপায়। ড্রোন হামলার মাধ্যমে বিনা রক্তপাতে অতি সহজেই দূর থেকে টার্গেটকে হিট করা যায়।

কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার এই আইডিয়া পছন্দ হয় না। ওবামার মনে হচ্ছিল আকাশ থেকে ড্রোন হামলা করা হলে আসে পাশে থাকে প্রতিবেশীদেরও প্রাণ হানির সম্ভবনা থেকে যাচ্ছে

আর ড্রোন হামলায় লাদেনের সাথে সাথে সাধারণ মানুষ মারা গেলে আন্তর্জাতিক মহলে আমেরিকার নিন্দা হতে পারে। এমনকি পাকিস্তান আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে।

এই রকম নানা ধরেনর প্রশ্ন আমেরিকার অপারেশনকে পিছুপা করে দিচ্ছিল। ওবামা এমন একটি পছন্দ সই অপারেশন করতে চাইছিলেন

যা হবে একেবারে ঝুঁকিপূর্ণ,যে অপারেশনের মাধ্যমে শুধুমাত্র টার্গেটকে হিট করা হবে,যাতে সাধারণ মানুষের কোনো ক্ষতি হবেনা আর পাকিস্তান ও টের পাবেনা।

এরকম বিষম পরিস্থিতে ওবামার বিশ্বাস জিতে নেয় আমেরিকার নেভি শীল। ওবামা ঠিক করে আমেরিকার নেভি শীল এফটাবাদের বাড়িতে অপারেশন করবে

আর এই গুপ্ত অপারেশনের নাম হবে অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার। পাকিস্তানের সেনা ছাউনির মাঝে এতবড় অপারেশন করার আগেদরকার ছিল

অপারেশনের নীল নক্সা তৈরী করে নিখুঁত ভাবে অপারেশনের মহড়া অভ্যাস করা। অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার মহড়া অভ্যাসের জন্য মার্কিন নেভি শীলের বেশ ক্যাম্পে

পাকিস্তানের এফটাবাদের ন্যায় পুরো পরিবেশ এবং লাদেনের ন্যায় একটি ডামি প্রাসাদ তৈরী করা হয়। তৈরী করা হয় লাদেনের বাড়ির আসে পাশের ন্যায় মহল।

মার্কিন নেভি শীল সেনার বেশ ক্যাম্পেই অপারেশনের মহড়া অভ্যাস শুরু হয়। মার্কিন সেনার ৯৮ জন নেভি শীল কমান্ডো দ্বারা নিয়মিত অপারেশনের অভ্যাস চলতে থাকে।

অপারেশনের নক্সা অনুযায়ী নিয়ম করে,কখন কে কিভাবে কোন জায়গায় এটাক করবে,এক পক্ষ আর এক পক্ষকে ব্যাকআপ কিভাবে দেবে সমস্ত কিছুর নিখুঁত অভ্যাস শুরু হয়।

ওবামা পুরো অপারেশনের জন্য ৩০ মিনিটের সময় দিয়েছিলেন। এই ৩০ মিনিটের মধ্যে টার্গেটকে হিট করে কমান্ড দিকে ফিরে আসার সময় বেঁধে দিয়েছিলেন।

আর এইভাবেই সময় মেনে ঘড়ির কাঁটার উপর নজর রেখে মার্কিন নেভাল বেসে চলতে থাকে লাদেন নিধনের প্রস্তুতি পর্ব।

নেপচুন স্পেয়ার
অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার

৯৮ জন নেভি শীল কমান্ডকে প্রশিক্ষণ দিয়ে মূল অপারেশনের জন্য শুধুমাত্র ২৪ জন কমান্ডোকে নিয়ে টিম তৈরী করা হয়।

অপারেশন করার জন্য টিমতো সিলেক্ট হয়ে গেল কিন্তু কমান্ডোদের নিয়ে পাকিস্তানে পাড়ি জমানোটাই ছিল আমেরিকার কাছে একটা বড় প্রশ্ন।

হেলিকপ্টার,চপারে পাকিস্তান সীমানায় প্রবেশ করলে পাকিস্তান আর্মির রাডারে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় নিতান্ত কম ছিলনা, অথচ আমেরিকা চাইছিল

চুপি সারে পাকিস্তানকে না জানিয়ে পুরো অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার কমপ্লিট করতে। অনেক ভাবনা চিন্তার পরে এই অপারেশনের জন্য ০৩ খানা স্পেশাল চপার ডিজাইন করা হয়।

পাকিস্তানের রাডারকে মাত দিয়ে মাটি থেকে অনেক কম উচ্চতায় উড়তে পারে,চপার ওড়ার সময় পাখার আওয়াজ ও ভাইব্রেশন যাতে খুব কম হয়

এইরকম ০৩ টি স্পেশাল চপার অপারেশন নেপচুন স্পেয়ারের জন্য তৈরী করে আমেরিকা। আমেরিকান নেভিশীলের কাছে আরো একটি সংশয় ছিল অপারেশনের সময় নিয়ে।

দিনের বেলা সূর্যের আলোয় অপারেশন করলে চপার লুকানো সম্ভব ছিলনা তাই শেষমেশ ঠিক হয় অপারেশন দিনের বেলা না করে রাত্রি বেলা করা হবে।

রাত্রিবেলা মানুষ যখন বিশ্রাম করবে তখন সেইসময় নিরিবিলি সময়ে অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার সম্পন্ন করা হবে।

আরো পড়ুন : বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্য। 

অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার


রাত্রের গভীর অন্ধকারে পাকিস্তান থেকে আমেরিকার সবথেকে কাছের আফগানিস্তানের মার্কিন সেনার বার্গাম এয়ার বেস থেকে ২০১১ সালের ০১মে রাত ১২ টা নাগাদ অপারেশন নেপচুন স্পেয়ারের উদ্দেশ্যে

০৩ খানা চপার ২৪ জন নেভিশীল কমান্ডোকে নিয়ে রওনা দেয়। পাকিস্তান আর্মির রাডার সিস্টেমকে মাত দিয়ে আফগানিস্তান থেকে টানা ৯০ মিনিট ওড়ান ভড়ে

২০১১ সালের ০২ মে রাত্রি ০১ টা ৩০ নাগাদ পাকিস্তানে লাদেনের এফটাবাদের বাড়ির ছাদে নেভি শীল এসে পৌঁছায়। প্রথম চপারটির ইঞ্জিনে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দিলে,

চপারের মধ্যে থাকা ০৮ জন কমান্ডো সহ পাইলট দড়ির সাহায্যে ছাদের উপরে নেমে পড়ে। এরপর নেভি শীল যাতে করে চপারের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কোন প্রকারের তথ্য প্রমান পাওয়া না যায়

সেইজন্য চপারটিকে পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। হোয়াইট হাউসে বসে ওবামা ও তার মন্ত্রী পরিষদ অপারেশন নেপচুন স্পেয়ারের লাইভ টেলিকাস্ট দেখছিল।

পরের দ্বিতীয় চপার থেকে বাকি ০৮ জন নেভি শীল কমান্ডো দড়ি বেয়ে সোজা লাদেনের বাড়ির উঠোনে নেমে আসে,উঠান থেকে কমান্ডোরা বাড়ির মেন্ দরজা

দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে। গ্রাউন্ড ফ্লোর ক্লিয়ার থাকায় নেভি শীলের কমান্ডোরা সিঁড়ি বেয়ে উপর তলার দিকে রওনা হচ্ছিল তখন সিঁড়িতে লাদেনের বড়ো ছেলে সামনে এলে সাইলেন্সার রাইফেল দিয়ে

কমান্ডোরা সেখানেই তাকে শুট করে দেয়। কমান্ডোর দ্বিতীয় গ্রুপ সেকেন্ড ফ্লোর সার্চ করার সময় একটি ঘরের মধ্যে লাদেনের সেই পত্রবাহকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।

কমান্ডোরা দরজায় লাথি মেরে দরজা ভেঙে রুমের ভিতরে প্রবেশ করে,পত্রবাহক খাটের পাশে থাকা A.K- ৪৭ রাইফেল উঁচিয়ে ধরার আগেই কমান্ডোরা তার বুকে গুলি মেরে নিচে শুইয়ে দেয়।

উপরে বাড়ির ছাদ ক্লিয়ার করার পর ছাদের সিঁড়ি বেয়ে লাদেনের তিন তলার ঘরে কমান্ডোরা এসে পৌঁছায়, নেভি শীল কমান্ডোরা লাদেনের বুকে শুট করার জন্য রাইফেল

বাগিয়ে ধরলে লাদেনের স্ত্রী লাদেনের মাঝখানে ঢাল হয়ে সামনে দাঁড়ায়। নেভি শীল কমান্ডোরা বিন্দু মাত্র সময় নষ্ট না করে লাদেনের স্ত্রীর পায়ে গুলি মারে।

লাদেনের স্ত্রী নিচে লুটিয়ে পড়তেই পরের দুই খানা গুলি লাদেনের মাথায় এবং চোখে লাগে। মাথায় গুলি লাগার সঙ্গে সঙ্গে লাদেনের মাথার অর্ধেক খোপড়ী উড়ে যায়।

এরপর ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর খবর হোয়াইট হাউসে পৌঁছায়। হোয়াইট হাউসের নির্দেশে লাদেনের মৃত লাশের ফটো সহ ফেসিয়াল রিকোগনাইজেশন টিম লাদেনের লাশের

ফেস ডেটা ম্যাচ করে ওসামা বিন লাদেনকে সনাক্ত করে। যদিও ওবামা অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার পুরো করার জন্য মোট ৩০ মিনিট সময় ধার্য্য করে দিয়েছিল,

অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার
অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার

কিন্তু একটি চপারে যান্ত্রিক গোলযোগের সৃষ্টি হওয়ায় অপরারেশন নেপচুন স্পেয়ারে আরো অতিরিক্ত  ১০ মিনিট সময় লাগে, সবমিলিয়ে অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার শুরু

থেকে ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যু অবধি টোটাল ৪০ মিনিট সময় নিয়েছিল আমেরিকা। অপারেশন শেষ করে কমান্ডোরা ওসামা বিন লাদেনের মৃত লাশ চপারে চড়ানো হয়।

পাকিস্তানের এফটাবাদের বাড়িতে অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার শুরু হয় ০২ মে রাত্রি ০১ টা ৩০ নাগাদ আর পুরো অপারেশন শেষ হয়ে যায় রাত্রি ০২ টা বেজে ১০ মিনিটের মধ্যে।

তাই ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর অপারেশনকে আমরা মনে রাখার জন্য ০২/০৫/১১ অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার নামে স্মরণ রাখতে পারি।

ওসামা বিন লাদেনের মৃত শরীরের জানাজা (অন্তিম সংস্কার)


আফগানিস্তানের বার্গাম এয়ার ষ্টেশনে ওসামা বিন লাদেনের মৃত লাশ এসে পৌঁছালে লাদেনের শরীরের DNA টেস্ট করা হয়। DNA টেস্টে পজেটিভ রিপোর্ট

আসলে আমেরিকা নিশ্চিত হয়ে যায় তারা সঠিক লখ্যে আঘাত হানতে পেরেছে। এরপর আমেরিকা সরকার অফিসিয়াল ভাবে লাদেনের মৃত্যুর ঘটনা সামনে নিয়ে আসে।

অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার তো শেষ হয়ে গেল,ওসামা বিন লাদেনের নিধন হল কিন্তু ওসামা বিন লাদেনের অন্তোষ্টি ক্রিয়া নিয়ে আমেরিকার মধ্যে সংশয় বাঁধে।

পাকিস্তানকে ওসামা বিন লাদেনের মৃত শরীর নিতে মানা করে দেয় অপর দিকে ওসামার নিজের জন্মভূমি সৌদি আরব লাদেনের লাশ দাফন নিয়ে মাথা ঘামায় না।

সত্যকথা বলতে আমেরিকা মন থেকে চায়নি ওসামা বিন লাদেনের মৃত শরীর নিয়ে কেউ তার অন্তিম সংস্কার করুক। কারণ লাদেনের লাশ নিতে কোনো দেশ স্বীকার করলে

কোনো না কোনো জায়গায় লাদেনের লাশ দাফন (কবর) দেওয়া হত,যা পরবর্তীকালে কোনো জেহাদী জঙ্গী সংগঠন লাদেনের কবরের মাজার বানিয়ে ফেলত।

আর লাদেনকে হিরো মেনে তার আদর্শে আরো ছোট বড় নতুন নতুন জঙ্গী সংগঠন গড়ে উঠত। তাই আমেরিকা ওসামা বিন লাদেনের মৃত লাশকে

মাঝ সমুদ্রে একটি নাম না জানা আয়ার ল্যান্ডে নিয়ে যায়। সেখানে পুরো ইসলামী রীতি রেওয়াজ মেনে ওসামা বিন লাদেনের মৃত শরীরকে একটি ০৫ কুন্টাল

ওজনের লোহার বড় কফিনের মধ্যে পুরে সমুদ্রের বুকে জলসমাধি দিয়ে দেয়। লাদেনকে যে জায়গায় নিয়ে গিয়ে জলসমাধি দেওয়া হয় আজও বিশ্ববাসীর কাছে একটি বড় কৌতূহল ?

3/5 - (2 votes)

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here