জমি জায়গা রেজিস্ট্রী করার নিয়ম এবং জমি কেনার আগে ও পরে কি করণীয়।

আজকে আমাদের পোস্ট জমি জায়গা রেজিষ্টি করার নিয়ম সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে। আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে জানব জমি জায়গা কেনার নিয়ম গুলো কি কি ?

এছাড়া জমি রেজিস্ট্রেশন কি,জমি রেজিস্ট্রেশন করার খরচ এবং জমি জায়গা ক্রয় ও বিক্রয় করতে কি কি কাগজ লাগে তার সমস্ত কিছু খুঁটিনাটি তুলে ধরার চেষ্টা করব।

আজকাল আমরা আমাদের প্রয়োজনে প্রায়শই জমি জায়গা কেনা বেচা করে থাকি,তবে আমার মনে হয় জমি জায়গা কেনার আগে জমি জায়গা কেনার নিয়ম ভালো করে জানা থাকলে

জমি কেনার জন্য একটা ভালো মানের জমি নির্বাচন করতে সুবিধা হয়। এছাড়া অনেকের মনে জমি জায়গা কেনার পর জমি রেজিস্ট্রি করার খরচ নিয়েও অনেক প্রশ্ন থাকে ?

তাই জমি জায়গা রেজিস্ট্রি করার নিয়মের পাশাপাশি জমি জায়গা কেনার নিয়ম গুলো সমন্ধে অবগত থাকলে সেক্ষেত্রে জমির ক্রেতা ও বিক্রেতা কাউকেই খুব একটা সমস্যাই পড়তে হয় না।

জমি জায়গা কেনার নিয়ম (Plot Bying Proces)

যখনই আপনি একটা জমি কিংবা জায়গা কিনতে যাবেন তখন সবথেকে বড় কাজ হয়ে সামনে আসে একটা পছন্দসই জমি নির্বাচন করা।

কিন্তু শুধু চোখে দেখে জমি নির্বাচন করে নিলেই তো হবে না, জমি জায়গা কেনার আগে কিভাবে একটি ভালো জমি নির্বাচন করা যায় সেই ব্যাপারটাও হাতে কলমে জানা দরকার।

০১. জমি নির্বাচন কিভাবে করবেন (Plot Selection)

জমি জায়গা রেজিষ্টি করার আগে আমাদের মুখ্য কাজ হল আপনার বাজেট অনুযায়ী একটি ভালো মানের জমি নির্বাচন করা।

জমির নির্বাচন আপনি দুই ভাবে করতে পারেন১) সরাসরি মালিকের সাথে কথা বলে, ২) Property Dealer এর কাছ থেকে জমি নির্বাচন করে জমি কিনতে পারেন।

কিন্তু আপনি যদি কোনো Property Dealer এর কাছ থেকে জমি কেনেন সেক্ষেত্রে আপনাকে হয়ত ব্রোকার চার্জ বাবদ অতিরিক্ত টাকা দিতে হতে পারে।

অপরদিকে আপনি যদি জমির মালিকের কাছ থেকে সরাসরি জমি কিনে থাকেন তাহলে আপনার সঙ্গে মালিকের সরাসরি দর দাম হবে তাই আলাদা করে ব্রোকার চার্জ দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।

এতোক্ষণ আমরা জমি কেনার মৌখিক দুটি বিষয় নিয়ে কথা বললাম এবারে আমাদের জমি কেনার জন্য জমি নির্বাচনের গৌণ কতগুলি জিনিস মাথায় রাখতে হবে –

০১. আপনি যার কাছ থেকে জমি জায়গা ক্রয় করছেন তার আদৌও জমি বা জায়গাটি বেচার অধিকার আছে কিনা সেটা দেখে নেবেন ?

০২. যিনি জমিটি বিক্রয় করতে চাইছেন তার নামে যদি দলিল না থাকে তাহলে একবার দেখেনিন তার নামে জমিটির পাওয়ার অফ এটনী করা আছে কিনা ?

০৩. যদি আপনার মনে হয় না জমি জায়গার কাগজ পত্র সব ঠিক ঠাক আছে তাহলে এখন আপনি জমি বিক্রেতার থেকে জমির দলিল অথবা পাওয়ার অফ এটনীর এক কপি করে নিজের কাছে জেরক্স নিয়ে নিন।

০৪. তারপর আপনি জমিটির আশেপাশের স্থানীয় লোকজনদের জিজ্ঞাসা করে দেখুন জমিটির উপর আগে থেকে কোনো রকমের মামলা মোকদ্দমা করা আছে কিনা ?

০৫. এরপর যেটা আমাদের দেখতে হবে যিনি জমিটি বিক্রয় করছেন তার নামে জমিটির Goverment Revenue Record এ জমির রেকর্ড করা আছে কিনা ?

০৬. জমির রেকর্ড অথাৎ নামজারী করা থাকলে একবার অনলাইনে পুতদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে সঠিক তথ্য যাচাই করে নিন।

০৭. এবারে আমাদের যেটা করতে হবে সেটা হল আপনি যেই জমিটি কিনতে চলেছেন তার উপর কোনো রকমের বন্ধকী কিংবা ব্যাঙ্ক লোন নেওয়া আছে কিনা সেটা একবার দেখে নিতে হবে।

০৮. আপনি যদি কোনো বিল্ডারের কাছ থেকে কোনো প্রপার্টি কেনেন কিংবা কোনো পুরোনো মালিকের কাছ থেকে তার পুরোনো ফ্লাট বাড়িটি কেনেন

সেক্ষত্রে অবশ্যই দেখে নেবেন ফ্লাট বা পুরোনো বাড়িটির Property Tax, Maintenance Due,Municipality Tax, Water Bill, Electric Bill etc বাকি আছে কিনা।

০৯. ফ্লাট বা পুরোনো বাড়িটির Property Tax, Maintenance Due,Municipality Tax, Water Bill, Electric Bill etc বাকি থাকলে সাব রেজিস্টার অফিসে জমি রেজিস্ট্রি নিয়ে সমস্যা হবে।

১০. উপরে দেওয়া সমস্ত তথ্য গুলো ঠিকঠাক ভাবে দেখে ও জমির নথির যাবতীয় সত্যতা যাচাই করে তবেই আপনি জমি জায়গা কেনার জন্য অগ্রসর হবেন।

০২.জমি জায়গার চুক্তিপত্র সই করা (Plot Agreement)

জমি কেনার জন্য একটি ভালো মানের জমি নির্বাচন হয়ে গেলে আমাদের পরবর্তী স্টেপ এসে যায় জমি জায়গার চুক্তিপত্র সই করা।

এখন এই চুক্তিপত্রে মোটামোটি বিবরণ লেখা হয় যেমন- জমির সর্বমোট ধার্য্য মূল্য এবং অগ্রিম(advance) হিসাবে কত টাকা দেওয়া হয় সেটা লেখা হয়।

নিয়ম অনুযায়ী ধার্য্য মূল্যের ১০ % অগ্রিম মূল্য হিসাবে দিতে হয়। এরপর জমি ক্রেতা ও বিক্রেতার দুই পক্ষের দুই জন করে স্বাক্ষীর সামনে সই স্বাক্ষর নিয়ে জমির ক্রয় বিক্রয়ের চুক্তি পত্রের বিবরণ লেখা হয়।

যেমন- অগ্রিম মূল্য দেওয়ার পরে জমির ধার্য্য মূল্যের বাকি টাকা চেকবুক,নেট ব্যাঙ্কিং,ইউপিআই,ব্যাঙ্ক ড্রাফট যেভাবে দেওয়া হবে তার বিবরণ লেখা হয়।

জমি রেজিষ্টির সময় ধার্য্য মূল্যের বাকি টাকা দেওয়ার পর জমি জায়গার রেজিষ্টি পক্রিয়া শুরু করা হয়। তবে মনে রাখবেন বড় অঙ্কের রাশি সবসময় ব্যাঙ্ক চেকের মাধ্যমে দেওয়ায় ভালো।

ব্যাঙ্ক চেকের মাধ্যমে পেমেন্ট করলে আপনার কাছে একটা সুবিধা থাকে আলাদা করে অতগুলো টাকা বয়ে নিয়ে যেতে হয়না,আর ক্রেতাও তার ব্যাঙ্ক একাউন্টে সরাসরি টাকা পেয়ে যায়।

অবশ্যই পড়ুন : ঘোষনাপত্র দলিল কি ? দলিল কাকে বলে (what is Sale Deed)

জমি জায়গা ক্রয় ও বিক্রয় করতে কি কি কাগজ লাগে 

জমি নির্বাচন ও জমি জায়গার চুক্তি পত্র হয়ে গেলে পরবর্তী স্টেপ আসে জমি জায়গা রেজিস্ট্রি করা। তবে জমি জায়গা রেজিস্ট্রি করার আগে আমাদের জানতে হবে জমি জায়গা ক্রয় ও বিক্রয় করতে কি কি কাগজ লাগে ?

জমি জায়গা রেজিস্ট্রির নিয়ম অনুযায়ী জমি ক্রয় ও বিক্রয় করার জন্য কতগুলো বৈধ কাগজের দরকার হয়। যেমন –

০১. যিনি জমি জায়গা বিক্রয় করছেন তার পাসপোর্ট সাইজ ০৩ কপি ছবি লাগবে।

০২. যিনি জমি জায়গা কিনছেন তার পাসপোর্ট সাইজ ০৩ কপি ছবি লাগবে।

০৩. যিনি জমি জায়গা বিক্রয় করছেন তার পরিচয় পত্র হিসাবে আধার কার্ড,ভোটার কার্ড অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্সের ০২ কপি করে জেরক্স (Self attested) লাগবে।

০৪. একই রকম ভাবে যিনি জমি জায়গাটি ক্রয় করছেন তার পরিচয় পত্র হিসাবে আধার কার্ড,ভোটার কার্ড অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্সের ০২ কপি করে জেরক্স (Self attested) লাগবে।

০৫. স্বাক্ষী হিসাবে উভয় পক্ষের দুই জন স্বাক্ষীর পাসপোর্ট সাইজ ছবি ও পরিচয় পত্রের ০২ কপি করে জেরক্স লাগবে।

এখন আমরা জানলাম জমি জায়গা ক্রয় ও বিক্রয় করতে কি কি কাগজ লাগে ? এবারে আমরা জানব জমি জায়গা রেজিস্ট্রি করার নিয়ম কিন্তু তার আগে জেনে নিই জমি রেজিস্ট্রেশন কি ?

জমি রেজিস্ট্রেশন কি ?

দেখুন সোজাভাবে বলতে গেলে জমি রেজিস্ট্রেশন কি বলতে যেটা বোঝাই তা হল,সরকারি তথ্য প্রমানের মধ্যে দিয়ে জমির মালিকানা হকের বিবরণ ও মালিকানা হক

জমি বিক্রেতার নাম থেকে জমি ক্রেতার নামে স্থানান্তর করা। আর সব জায়গাতেই একইভাবে সাব রেজিস্টার অফিসে রেজিস্টারের সামনে উভয় পক্ষের সহমতিতে জমি জায়গার রেজিস্ট্রেশন পক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

জমি জায়গা রেজিস্ট্রি করার নিয়ম

জমি জায়গা রেজিস্ট্রি করার নিয়ম আমরা কতগুলো স্টেপে বোঝার চেষ্টা করব। আসুন জমি জায়গা রেজিস্ট্রি করার নিয়ম গুলো দেখে নেওয়া যাক।

জমি জায়গা রেজিষ্টি করার নিয়ম
জমি জায়গা রেজিষ্টি করার নিয়ম

০১. জমি জায়গা রেজিস্ট্রি করার জন্য উভয় পক্ষকে ০২ জন করে ০৪ জন স্বাক্ষী নিয়ে যেতে হবে।

০২. জমি জায়গা রেজিস্ট্রি করার জন্য নিয়ম মাফিক জমির ক্রেতা ও বিক্রেতা দুই জনকেই জমি জায়গা রেজিস্ট্রি করার জন্য সাব রেজিস্টার অফিসে যেতে হবে।

০৩. যদি কোনো কারণবশত জমি জায়গার ক্রেতা কিংবা বিক্রেতা নিজে জমি জায়গা রেজিস্ট্রি করার জন্য সাব রেজিস্টার অফিসে আসতে না পারে তাহলে

যোগ্য কোনো ব্যক্তিকে তার পাওয়ার অফ এটনী দিয়ে পাঠাতে হবে। রেজিস্টার অফিসে পাওয়ার অফ এটনীর যাবতীয় তথ্য যথারীতি যাঁচাই করে দলিলে তার নাম উল্লেখ করা হবে।

০৪. জমির রেজিস্ট্রেশন পক্রিয়া পুরো করার জন্য দলিলে সমস্ত জমি জমা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যের সঠিকভাবে বয়ান মাফিক উল্লেখ করার জন্য একজন উকিল কিংবা মহুরী দলিল লেখক জোগাড় করতে হবে।

অবশ্যই পড়ুন : জমির রেকর্ড কি ? জমি জায়গার রেকর্ড বা নামজারী করা কেন জরুরি। 

জমি রেজিষ্টি করার খরচ

জমি রেজিস্ট্রি করার নিয়মের মধ্যে অন্যতম অংশ হিসাবে জমি রেজিস্ট্রি করার খরচ ব্যাপারটা এসে যায়। প্রত্যেক এলাকার জমি জায়গার ক্রয় মূল্য ও বিক্রয় মূল্য দুই ভাবে নির্ধারিত হয়।

যেমন- ০১. জমি জায়গার সরকারি মূল্য (Cercale Value),০২. বাজার দর অনুযায়ী ধার্য্য মূল্য (Market Value) এই দুই ধরনের মূল্যের মধ্যে যার মূল্য বেশি তার উপর জমি জায়গার স্ট্যাম্প শুল্ক নির্ধারিত হয়।

জমি জায়গার রেজিস্ট্রি মারফৎ পাওয়া স্ট্যাম্প শুল্ক রাজ্য সরকারের রাজস্বখাতায় জমা হয়। আপনি চাইলে আপনার এলাকার জমি জায়গার সরকারি মূল্য অনলাইনে পুতদপ্তরের ওয়েব সাইটে চেক করতে পারেন।

জমি জায়গা রেজিস্ট্রি করার নিয়মানুযায়ী সরকারি মূল্য এবং বাজারের মূল্য যেটার মূল্য বেশি থাকে তার উপর সরকারকে স্ট্যাম্প শুল্ক দিতে হয়।

কিন্ত সচরাচর সরকারি মূল্যের উপর সরকারকে জমি জায়গার রেজিস্ট্রি খরচ বাবদ স্ট্যাম্প শুল্ক দিতে হয়। কিন্ত সরকার বিভিন্ন জায়গায় এলাকাভেদে জমি রেজিস্ট্রির জন্য আলাদা আলাদা স্ট্যাম্প শুল্ক নিয়ে থাকে।

শহর এলাকায় জমি জায়গার ধার্য্য মূল্যের উপর ০৪-১০ % স্ট্যাম্প শুল্ক নেওয়া হয়। যেমন- কোনো জমি জায়গার দাম যদি ১০ লক্ষ টাকা হয়,

তাহলে ১০ % হিসাবে সরকারকে ০১ লক্ষ টাকা স্ট্যাম্প শুল্ক দিতে হবে। তার সাথে রেজিস্ট্রি খরচ বাবদ আলাদাকরে property value র উপর ০১ % রেজিস্ট্রি ফি দিতে হয়।

এক্ষেত্রে আপনি যদি নিজে স্ট্যাম্প শুল্ক নির্ণয় করতে না পারেন তাহলে আপনি কোনো মহুরি কিংবা উকিলের থেকে সাহায্য নিতে পারেন।

স্ট্যাম্প শুল্ক কিভাবে দিতে হয় 

এইধাপে আমরা জমি রেজিস্ট্রেশনের জন্য স্ট্যাম্প শুল্ক কিভাবে দিতে হয় সেই ব্যাপারে আলোচনা করব। স্ট্যাম্প শুল্ক আপাতত ০৩ ভাবে দেওয়া হয়।

০১. নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার ( Non Judishial Stamp Paper )

এখন অব্ধি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার দিয়েই স্ট্যাম্প শুল্ক সবথেকে বেশি দেওয়া হয়। এবারে প্রশ্ন হল নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার আপনি কোথায় পাবেন ?

সরকার দ্বারা অনুমোদিত ভেন্ডরের কাছ থেকে আপনাকে জমির দাম অনুযায়ী স্ট্যাম্প শুল্ক দেওয়ার জন্য নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার কিনতে হবে।

সচরাচর রেজিস্ট্রি অফিসের আসেপাশেই সরকার দ্বারা অনুমোদিত অনেক নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ভেন্ডরের দোকান থাকে।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ১০ লক্ষ টাকা বা তার উপরে জমির দাম হলে সেই জমির ধার্য্য মূল্যের উপর ০৬ % স্ট্যাম্প শুল্ক দিতে হয়।

তাহলে হিসাব করে দেখতে গেলে আপনাকে ১০ লক্ষ টাকার ০৬ % হিসাবে ৬০ হাজার টাকা স্ট্যাম্প শুল্ক দিতে হবে। এবার আপনি স্ট্যাম্প ভেন্ডরের কাছ থেকে

১৫ হাজার করে ০৪ খানা কিংবা ১০ হাজার করে ০৬ খানা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার কিনতে পারেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখতে পাওয়া যায় আপনি ১০ লক্ষ টাকার উপর

১৫ হাজার করে ০৪ খানা জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার কিনেছেন কিন্ত সেই স্টাম্প পেপারে সেল ডিড এর পুরো বিবরণ ধরছে না,সেক্ষেত্রে পুরো বিবরণ ধরার জন্য আলাদা করে স্ট্যাম্প পেপার কেনার

কোনো প্রয়োজন নেই আপনি স্ট্যাম্প পেপারে পিছনে সাদা কাগজ যোগ করে বাকি অবশিষ্ট বিবরণ লিখতে পারেন।

০২. ফ্রেন্কিং মেথড ( Franking Method )

ফ্রেন্কিং মেথডে স্ট্যাম্প শুল্ক দেওয়ার জন্য কতগুলি সরকারি এবং কর্পোর্টেড ব্যাঙ্ক নির্দিষ্ট করা হয়েছে। তার জন্য আপনাকে জানতে হবে কোন কোন ব্যাঙ্কে ফ্রেন্কিং মেথডে স্ট্যাম্প শুল্ক নেওয়া হয়।

সরকার অনুমোদিত যে সমস্ত ব্যাঙ্ক গুলোতে ফ্রেন্কিং মেশিন উপলব্ধ আছে সেই সমস্ত ব্যাঙ্ক গুলোতে আপনি ফ্রেন্কিং মেথডে স্ট্যাম্প শুল্ক দিতে পারেন।

ফেন্কিং মেথডে আপনি ব্যাঙ্কে Cheqe,RTGS,Bank Draft,Cash Deposit ইত্যাদি দ্বারা স্ট্যাম্প শুল্ক দিতে পারেন। ফ্রেন্কিং মেথডে সাদা কাগজের উপর উকিল কিংবা মহুরি দ্বারা

জমি জায়গার সেল ডিড এর পুরো বিবরণ লিখে দিতে হয়। সেখানে ব্যাঙ্ক কর্মচারী দ্বারা আপনার সেল ডিড এর উপর ফ্রেন্কিং মেশিন দিয়ে Computraside stamp genrate করে দেওয়া হয়।

০৩. ই-স্ট্যাম্প মেথড ( EStamping method )

বর্তমানে ই-ট্রাম্প মেথডে স্ট্যাম্প শুল্ক দেওয়ার প্রচলন ক্রমশ বেড়ে চলেছে। সরকার ই-স্ট্যাম্প বিক্রি করার জন্য বেশ কিছু ভেন্ডরকে সরকারি ভাবে অনুমোদন দিয়েছেন।

আপনি সরকার অনুমোদিত ই-স্ট্যাম্প ভেন্ডরের কাছ থেকে স্টাম্প শুল্ক দিতে পারেন। আপনি ই-স্ট্যাম্প ভেন্ডরের কাছেই ই-স্ট্যাম্প পেপার পেয়ে যাবেন।

সেখানেই আপনার দলিল লেখক বা মহুরিল আছে তিনি আপনার জমি জায়গার বিবরণ কম্পিউটারের সাহায্যে টাইপ করে ই-স্ট্যাম্প পেপারে জমির যাবতীয় তথ্য লিখে দেবেন।

সম্প্রতি ভারত সরকার ই-স্ট্যাম্প পেপারের ডেটা স্টোরেজ করার জন্য Stock Holding Corporation of India কে  Central record keeping agencey হিসাবে নিযুক্ত করেছে।

জমির রেজিস্ট্রেশন 

জমি জায়গা কেনার নিয়মের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল জমির রেজিস্ট্রেশন করা। জমির রেজিস্ট্রির নিয়ম পুরো হয় সাব রেজিস্টার অফিসে গিয়ে।

জমি কেনার পর জমির রেজিস্ট্রেশন করার জন্য সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে টোকেন সংগ্রহ করতে হয়। এই টোকেন আপনি ০২ ভাবে সংগ্রহ করতে পারেন।

০১. সাব রেজিস্টার অফিসে নিজে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে,০২. আপনার জেলার কিংবা ব্লকের সাব রেজিস্টার অফিসের অনলাইনে পোর্টালে নাম ঠিকানা দিয়ে।

সাব রেজিস্টার অফিসে মূলত ০৩ খানা কাউন্টার থাকে – প্রথম কাউন্টারে জমির ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কে রেজিস্টার অফিসের স্টাফ জিজ্ঞাসা করে তারা নিজের ইচ্ছায় জমি ক্রয় ও বিক্রয় করছেন কিনা ?

এরপর দুই পক্ষের স্বাক্ষী দিকে ডেকে জমির মূল্য জিজ্ঞাসা করা হয়। তারপর জমির ক্রেতা,জমি বিক্রেতাকে জমির প্রাপ্য দাম মিটিয়ে দিয়েছেন কিনা জিজ্ঞাসা করা হয়।

দ্বিতীয় কাউন্টারে ক্রেতা ও বিক্রেতা এবং দুই পক্ষের স্বাক্ষীর দশ আঙুলের ছাপ ও চোখের মনি স্ক্যান করে অনলাইন ডেটা সেন্টারে আপলোড করা হয় ।

তৃতীয় কাউন্টারে সেল ডিড অথাৎ দলিল জমা করা হয়। এখানে সাব রেজিস্টারের তত্বাবধানে জমি ক্রেতা ও বিক্রেতা এবং দুই পক্ষের স্বাক্ষীদের দলিরের উপর সই স্বাক্ষর করানো হয়।

এইভাবে জমি রেজিস্ট্রেশন পক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এরপর গভমেন্ট সাইটে পুরো ডেটা আপলোড হতে কিছুদিন সময় লাগে।

তবে জমি রেজিস্ট্রেশন পক্রিয়া পুরো হওয়ার ১৪ দিন পরে রেজিস্টার অফিসে টোকেন দেখিয়ে আপনি জমির দলিল সংগ্রহ করা যায় ।

অবশ্যই পড়ুন : স্ট্যাম্প শুল্ক কি ? স্ট্যাম্প শুল্ক কিভাবে ক্যালকুলেট করতে হয়। 

পরিশিষ্ট 

এইভাবে ধাপে ধাপে জমি জায়গা কেনার নিয়ম অনুযায়ী  জমি জায়গার রেজিস্ট্রেশন পক্রিয়া সম্পন্ন হয়। কিন্ত শুধুমাত্র রেজিস্টার অফিসে গিয়ে সেল ডিড পক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেলেই

জমির রেজিস্ট্রেশন পক্রিয়া সম্পন্ন হয়না। যতক্ষণ পর্যন্ত গভর্মেন্ট রেভিনিউ রেকর্ডে জমির মালিকানা হক পরিবর্তন না হচ্ছে ততদিন জমির মালিকানা হক জমির পুরোনো মালিকের নামেই থাকে।

তাই জমি রেজিস্ট্রেশন হওয়ার পরে পরে ভূমি কল্যাণ অফিসে গিয়ে জমির রেকর্ড অথাৎ নামজারী করে নেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি।

এই আর্টিকেল গুলো পড়ে দেখুন
2/5 - (1 vote)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here